শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৫১ অপরাহ্ন
 
								
                            
                       
বরিশালে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান হলিং বেরী সৈয়দ মোয়াজ্জেম রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের এক চিকিৎসকের এমবিবিএস সনদ নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ওই চিকিৎসক তার ভিজিটিং কার্ডে একাধিক ডিগ্রির কথা উল্লেখ করলেও কোথাও এমবিবিএস শব্দটি নেই।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রেশন নম্বর না থাকার অভিযোগও আছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে কমিশনের বিনিময়ে এক হাসপাতালের রোগী অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর, চুক্তিতে চিকিৎসা এবং ওষুধ চুরিরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ কারণে এক বছর যাবৎ ওই চিকিৎসকের বেতন-ভাতা বন্ধ রেখেছেন হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম ডা. মো. শহিদুল ইসলাম। তার ভিজিটিং কার্ডে তিনি নামের নিচে উল্লেখ করেছেন ডিজিও, এমসিপিএস (গাইনি), কনসালট্যান্ট (গাইনি)। তবে নেই এমবিবিএস শব্দটি। এ হাসপাতালে প্রায় ৬ বছর ধরে কর্মরত তিনি।
হাসপাতালের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ফুসলিয়ে নগরীর সিটি হাসপাতালসহ অন্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পাঠান ডা. শহিদুল ইসলাম। এ ছাড়া রোগীর স্বজনদের দিয়ে অতিরিক্ত দামের ওষুধ কেনার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।
সূত্র জানায়, নানা অভিযোগ পাওয়ার পর হাসপাতালের সভাপতি সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ গত বছরের জানুয়ারি থেকে ওই চিকিৎসকের বেতন-ভাতা বন্ধ রেখেছেন।
হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন খান বলেন, ডা. শহিদুল প্রায় ৬ বছর ধরে সেখানে গাইনি বিভাগের কনসালট্যান্ট হিসেবে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তার বেতন-ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে।
ডা. শহিদুল ইসলাম এমবিবিএস পাস করেছেন কি-না; জানতে চাইলে মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমি তিন বছর আগে এখানে যোগদান করেছি। ডা. শহিদুল যোগদান করেছেন ৬ বছর আগে। এ কারণে তার এমবিবিএস সনদ আছে কি-না সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারব না।’
হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘ডা. শহিদুলের এমবিবিএস সনদ আছে কি-না; তা আমার জানা নেই।’
বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, শহিদুল ইসলাম যদি এমবিবিএস পাস না করে থাকেন এবং তার যদি বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন না থাকে, তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ বিষয়ে ডা. শহিদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যার কারণে তার বেতন-ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে তার বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন রয়েছে, যার নম্বর অ-৩৯৬৮৩। ভিজিটিং কার্ডে এমবিবিএস ডিগ্রি উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক নয় বলে তিনি দাবি করেন।